ভোলায় সেনা ও পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ
বিশেষ প্রতিনিধি//
ভোলা সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে ইকবাল ও জাহিদ (সেনা-পুলিশ সদস্য) বিরেুদ্ধে অবৈধভাবে জমি দখলের অভিযোগ করেছেন মোস্তাফিজ পন্ডিত। এ খবরে জমির মালিক প্রবাসী নুরে আলম মনির স্ট্রোক করে মারা যাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, ভোলা সদরের আলীনগর ইউনিয়নের মোস্তাফিজ পন্ডিত তার প্রবাসী ছেলে নুরে আলম মনিরের পাঠানো টাকা দিয়ে ২০১৭ সালে স্থানীয় রুপিয়া বেগমের কাছ থেকে রুহিতা মৌজার এসএ ৩৪৩ খতিয়ানের ১২২৫ ও ১২২৬ দাগের হাল ২৭১৩ দাগের বাগানের সাড়ে ৮৪ শতাংশ জমি ২৮ লাখ আট হাজার টাকায় ক্রয় করেন। জমি কেনার পর মোস্তাফিজ রেজিস্ট্রী দলিল অনুযায়ী নামজারী (রেকর্ড) করান এবং উক্ত জমি ভোগদখল করে আসছেন। একই মালিক রুপিয়া বেগমের কাছ থেকে পার্শ্ববর্তী আমির হোসেন তার ছেলে সেনা সদস্য জাহিদ, পুলিশ সদস্য ইকবালের নামে ২০১৭ সালে একই মৌজার এসএ ১৫৯/১ খতিয়ানের ১১৯৬, ১২২৮, ১২২৯, ১২৩০ ও ১২৩৫ দাগের এক একর সাড়ে ৬ শতাংশ জমি ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেন। এর মধ্যে নালে জমি রয়েছে এক একর, বাড়ী রয়েছে সোয়া ৬ শতাংশ ও বাগান রয়েছে ও ০.০২৫ শতাংশ। জমি ক্রয়ের পর থেকে দলিলে উল্লেখিত ভোগদখল অনুযায়ী ১১৯৬, ১২২৯ ও ১২৩০ দাগে ভোগ দখল করিতেছেন। সে অনুযায়ী ২০১৭ সালে তাদের নামে নামজারি করেছেন।
কিন্তু আমির হোসেন ২০১৯ সালে মোস্তাফিজের ছেলের নামে ক্রয় করা জমির নামজারি রেকর্ডের বিরুদ্ধে ভূমি অফিসে মামলা করেন। ওই মামলা পরপর দুইবার মোস্তাফিজের ছেলে নুরে আলম মনিরের পক্ষে রায় হয়। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত ক্ষমতার কারণে ৩য় বার রায় তাদের বিপক্ষে চলে যায়। রায় অনুযায়ী ২০১৯ সালে মোস্তাফিজের ছেলের ৩৬ শতাংশ জমি আমির হোসেনের ছেলেদের নামে রেকর্ড করে নেয়। এর কিছুদিন পর আমির হোসেনসহ তার ছেলে সেনা সদস্য জাহিদ ও পুলিশ সদস্য ইকবাল জোরপূর্বক মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলের ক্রয়কৃত ভোগদখলীয় জমিতে প্রবেশ করে গাছের সুপারী নিয়ে যায় এবং বেশ কয়েকবার অবৈধ রেকর্ডের বলে ওই জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছেন আমির হোসেন। মোস্তাফিজকে ওই জমির কাছে যেতে নিষেধ করেন। জমিতে প্রবেশ করলে মোস্তাফিজুর রহমানকে হুমকি দেন আমির হোসেন ও তার দুই ছেলে পুলিশ সদস্য মো. ইকবাল ও সেনা সদস্য মো. জাহিদ।
তাদের এ সকল জাল জালিয়াতির কারণে মোস্তাফিজের প্রবাসী ছেলে নুরে আলম মনির স্ট্রোক করে মারা যান বলেও জানান মোস্তাফিজ।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আমির হোসেন জানান, তিনি ও মোস্তাফিজ পন্ডিত একই মালিকের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন। মোস্তাফিজুর রহমানই মধ্যস্ততা করে তাকে ওই জমি কিনে দিয়েছেন। তিনি তার দুই ছেলের নামে ওই জমি কিনেছেন। তাদেরকে বিল দিয়ে জমি দখল দিয়েছেন। ওই জমি মোস্তাফিজ লগ্নি লাগিয়ে তাকে টাকা এনে দিতো। হঠাৎ শুনতে পেয়েছি আমি যে মালিকের কাছ থেকে জমি কিনেছি তার বিলের দাগে জমি কম। তাই বাগানের দাগ অনুযায়ী রেকর্ড করে জমি ভোগদখল করেছি। আমরা মোস্তাফিজুর রহমানের কোন জমি দখল করেনি এবং আমি ও আমার ছেলেরা মোস্তাফিজুরকে কোন হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাইনি।
আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বশির আহমেদ বলেন, এরকম কোন কিছু আমি শুনতে পাইনি। কেউ এ ব্যাপারে আমার কাছে আসেনি। যদি কেউ অভিযোগ নিয়ে আসে তাহলে বিষয়টি দেখবো।