ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষকদের এমপিও ভূক্তির চেষ্টা ! মামলা

DipKantha
DipKantha
প্রকাশিত: ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার//

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে ২০ শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও ভূক্তির আবেদন প্রেরণ করে বিপাকে পরেছেন চরফ্যাসন উপজেলার হাজারীগঞ্জ মোহাম্মদীয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার রুহুল আমিন।

সরকার কর্তৃক চলতি বছরের ৬ জুলাই ঘোষিত এমপিওর তালিকায় স্থান। পরে ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলায় হাজারীগঞ্জ মোহাম্মদীয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার এমপিওর আদেশের পরে মাদ্রাসার সুপার মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালীন ১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ সংক্রান্ত সকল স্বাক্ষর তৈরী করে প্রাক্তন সুপার কম্পোজ করে মাদ্রাসা অধিদপ্তরে এমপিও ভূক্তির আবেদন প্রেরণ করেন।

পদ বঞ্চিতরা এ খবর পেয়ে ভোলা জেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল মেজিষ্ট্রেট এর আমনী আদালতে তিনটি মামলা দায়ের করেন যার স্মারক এমপি ৫৬৯/২২, ৫৫৩/২২ ও ৫৪৬/২২। আদালত মামলা তিনটি আমলে নিয়ে সিআইডি ভোলাকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। সিআইডি ভোলা তদন্তের কার্যক্রম শুরু করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায় সৃজিত শিক্ষক-কর্মচারীদের ০৩/১০/২০০৪ ও ১০/১২/২০০৪ ইং তারিখের ইনকিলাব সহ বিভিন্ন পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি হয়েছে বলে যে পত্রিকা সৃজন করা হয়েছে মূলত উক্ত পত্রিকায় এ মাদ্রাসার কোন বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়নি। চাদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় তজুমদ্দিন এর ২০০৪/৪১ তাং ২০/১০/০৪ তারিখের স্বাক্ষরকে ডিজির প্রতিনিধির পত্রটি জাল, এমনকি জেলা শিক্ষা অফিসার, ভোলার স্বাক্ষরীত শিক্ষক নিয়োগের প্রাপ্যতা ও ডিজির প্রতিনিধির পত্র ও সৃজিত সাথে স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে চরফ্যাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর।

সুপার কর্তৃক তার মেয়ে, ছেলে, জামাতা, ভাগিনাসহ কতিপয় নিকটাত্মীয় ও বিপুল পরিমান উৎকোচ গ্রহন পূর্বক এ জাতীয় জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীরা অীভযোগ করেন।

সুপার সহ গোলাম মাওলা ও সুপারের মেয়ের সনদ নিয়ে ও মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজুল হক জানান তিনি এ মাদ্রাসার কোন নিয়োগের কম্পোজে স্বাক্ষর করেননি, যা তিনি মাদ্রাসা অধিদপ্তরকে অবহিত করেছেন। তবে মাদ্রাসাটির এমপিওর আদেশ প্রাপ্তির পর চরফ্যাসন উক্ত বাজারের একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আমাকে কিছু নিয়োগের কাগজে সাইন করতে বললে আমি তার প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করি।

২০০৮ সালে চরফ্যাসন উপজেলার কর্মরত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তফা কামাল জানান তার কর্মকালীন সময়ে এ মাদ্রাসার কোনে নিয়োগের কার্যক্রম হয়নি। তিনি তার স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি অবহিত হয়ে মহা-পরিচালক মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত করেছেন।

তবে সুপার রুহুল আমিন বলেন, প্রাক্তন সভাপতির নির্দেশে আমি মাদ্রাসাটির কিছু পুরাতন শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছি। ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল সহ পত্রিকা সৃজন ও ডিজির প্রতিনিধির পত্র সৃজনের বিষয়টি এড়িয়ে যান।

মামলার বাদী সফিউল্যাহ জানান, তিনি ১৫/০৪/৯৪ইং থেকে কর্মরত আছেন, আরেক বাদী সুলতানা রাজিয়া জানান তিনি ১৫/০৩/২০০৮ থেকে কর্মরত আছেন অথচ এখন তাদেরকে বাদ দিয়ে সুপারের মেয়ে ও ভাগিনাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মাদ্রাসার জমি দাতা ও অপর মামলার বাদী নুরুল ইমাম জানান, আমি এ জাল জালিয়াতির প্রতিকার চেয়ে মামলা দায়ের করেছি। উক্ত মামলার কপি েেজলা শিক্ষা অফিসারকে দিয়েছি। জেলা শিক্ষা অফিসার মামলা নিষ্পত্তির পূর্বে কোন এমপিওর আবেদন প্রেরণ না করার নির্দেশ প্রদান করেছেন।

চরফ্যাশন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন জানান, হাজারীগঞ্জ মোহাম্মদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার কর্তৃক এমপিও ভুক্তির আবেদনকৃত শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া জাল জালিয়াতিভাবে সম্পন্ন হয়েছে মর্মে অভিযোগ করায় উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভূক্তির আবেদন প্রাথমিক ভাবে বাতিল করা হয়।

প্রসঙ্গত, চরফ্যাশন উপজেলার উত্তর ফ্যাসন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার নিয়োগপ্রাপ্ত সুপার মো. মোসলেহ উদ্দিন একই উপজেলার হাসানগঞ্জ হোসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী পদে কর্মরত আছেন। হাসানগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসার নবনিযুক্ত সুপার আবু ইকবাল মোহাম্মদ ন‚র হোসাইন চরফ্যাশন উপজেলার আসলামিয়া হামেলা খাতুন বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক শরীরচর্চা পদে কর্মরত আছেন। হাজারীগঞ্জ মোহাম্মদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার নবনিযুক্ত সুপার মো. রুহুল আমিন তজুমুদ্দিন উপজেলার মোহাম্মদ ভেলা ওমর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী শিক্ষক হিসাবে কর্মরত আছেন।