মতামত —– আবু বক্কর সিদ্দিক

DipKantha
DipKantha
প্রকাশিত: ৯:১০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২১

জাতীয় সংসদে হিন্দুদের জন্যে ৬০ আসন দাবী
(৫/১১/২১, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের পক্ষেমহাসচিব, এড, গোবিন্দ চন্দ্র প্রমানিক)

ধর্ম যার যার, উৎসব সকলের। এমন মহৎ, দামী শ্লোগান বিরোধী দাবী হয়ে গেল। দেশ সকলের, আসন কেন যার যার? আসন তো সকলের হওয়ার কথা। রাষ্ট্রের সাথে ধর্মের সংঘাত,সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প দেখতে পাচ্ছেন ?

না, তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরা তা এখন দেখবেন না। ভারতে মুসলিম হত্যা, সীমান্তে মুসলিম হত্যা উনারা দেখেন না। দেখেন শুধু মন্দিরে আগুন, হিন্দু নির্যাতন, আদিবাসীরা ভুমি হারায়। তা নিয়ে উনাদের দুঃখের শেষ নেই। দেশের একজন খ্যাত আলেম, ভাল মুসলমানের মৃত্যুতে, গ্রেপ্তারে, নির্যাতনে এই বুদ্ধিপ্রতিবন্দীরা মুখে তালা মেরে তামাশা দেখে।
এখন হিন্দুদের দাবীতেও উনারা খুশি।
দেশে অরাজকতা হলে উনাদের লাভ।

হিন্দুদের পৃথক নির্বাচনে হিন্দু প্রতিনিধি হোক। এমন দাবীতে আমি ১০০% একমত। কিন্তু উনাদের ৬০ আসন দাবীটা গাজাখুরী দাবী। দেশে বর্তমানে ৯২% মুসলমান, ৮% অমুসলিম ( হিন্দু+বৌদ্ধ+খৃষ্টান +বিভিন্ন উপজাতি) । জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনে ৮% হল ২৪ আসন। মুসলিম ছাড়া বাকী সকলের জন্যে ২৪ আসন দাবী যুক্তিক। ৬০ আসন দাবীর ভিত্তি নেই। পাগলের প্রলাপ।

একটি সেক্যুলার রাষ্ট্রে ধর্ম ভিত্তিক সম্প্রদায় বিবেচনার দাবী রাষ্ট্র কাঠামো, মুলনীতি, সংবিধানের পরিপন্থী। সেক্যুলার বিরোধী দাবী। সেক্যুলারপন্থীরা এমন যুক্তি দেখিয়ে আলেম -ওলামার দাবী প্রত্যাখান করেন।

আমাদের হিন্দু ভাইরা নির্যাতিত। অনেকে অধিকার বঞ্চিত। এই সত্য অস্বীকার করা যাবে না। তবে এই নির্যাতনের মুল কারন নোংরা রাজনৈতিক ক্রিয়া। ধর্মীয় কারন নয়। কোন ধর্মীয় দল হিন্দু বিদ্বেষী নয়।হিন্দুদের প্রতি হামলা হলে ইসলামপন্থীরা তাদের পাশে দাঁড়ায়, প্রতিবাদ জানায়, বিচার চায়। দেশের কোন ইসলামী দল হামলা করেছে, প্রমান থাকলে পেশ করুন। তাদের বিচার করতে পারেন।

ভারতে প্রতিদিন মুসলমান হত্যা করা হয়, বাড়িঘর, ব্যবসা কেন্দ্র ধ্বংস করা হয়। আসাম,ত্রিপুরায় এত অত্যাচার হল আমাদের হিন্দু ভাইরা চুপ, নীরব। আমাদের বাম ধারা, সেক্যুলার ধারা চুপ, প্রতিবাদ নেই। এই নীরবতাকেই সাম্প্রদায়িকতা বলে। উনারাই অসম্প্রদায়িকতার কথা বলেন। এই চিন্তাটা শুধু ভারত, বাংলাদেশে। অন্য কোন সেক্যুলার রাষ্ট্রে এমন বৈষম্য চিন্তা নেই। এটা সেক্যুলার বিরোধী অবস্থান।

এই কারনে বাংলাদেশের পাবলিক সেক্যুলার বিরোধী। উনাদের ইসলাম বিরোধী, মুসলিম বিদ্বেষ মজ্জাগত অভ্যাস। ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান উনাদের ধর্ম। আওয়ামী লীগের বিরাট অংশ এই সেক্যুলারিজম মানে না। তারাও মুসলিম জাতিসত্বায় বাঁচতে চায়।
হিন্দুদের এই দাবী তারা মানবে না। এটা আমার বিশ্বাস।

হিন্দু ভাইরা নাগরিক অধিকার নিয়ে সোচ্চার হন। যুক্তিক দাবী জানান। অযুক্তিক দাবী কেউ মানবে না। রাষ্ট্র আমাদের সকলের। এখানে কাউকে অধিকার বঞ্চিত করার সুযোগ নেই।