মতমত-আবু বকর সিদ্দিক। “তামিল নাড়ুর ঘটনা- কুমিল্লার ঘটনা”

DipKantha
DipKantha
প্রকাশিত: ১২:২৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২১

তামিল নাড়ুর ঘটনার সাথে কুমিল্লার ঘটনা মিলিয়ে দেখুন। লক্ষ্য-উদ্দেশ্য মানুষ একই। শুধু স্থান ভিন্ন।

বংগপোসাগর এবং ভারত মহাসাগর তীরে ভারতের তামিল নাড়ু রাজ্য। আয়তনের দিক হতে ১১তম,জনসংখ্যার দিক হতে ৭ম এবং জিডিপি অবদানে ৫ম, পর্যটন নির্ভর এই রাজ্য। চেন্নাই প্রধান শহর এবং রাজধানী। সম্প্রতি তামিল নাড়ুতে মন্দিরে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। মন্দির এলাকার বিপুল মুসলিম অধিবাসী উচ্ছেদ করে বাড়ি-ঘর,ভুমি দখল, হিন্দুত্ববাদী মুদি সরকারের মুসলিম বিদ্বেষ উস্কে দেয়ার অশুভ পরিকল্পনা করা হয়।
পুঁজার খন্দে প্রতিদিন এক ব্যক্তি ভোরে এসে মন্দিরের সামনে গরুর গোশত রেখে যায়। তাতে মুসলিম বিদ্বেষে পেট্রল ঢালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। মন্দিরের কর্তারা ভিডিও ফুটেজ দেখে লোকটিকে সনাক্ত করল। তার ব্যবহৃত মটরসাইকেলের নাম্বার হতে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সে হরি রাম নামক বিজিপির একজন ৪৮ বছর বয়সের উচ্চ শিক্ষিত, উচ্চ বর্ণের হিন্দু।
গোশত রাখার উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের উস্কে দাংগা লাগিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করা। মুসলমান উচ্ছেদ হলে লাভ দুইটাঃ
১) তাদের সম্পদ,বাড়ি ঘর, জায়গা জমি দখল করা যাবে।
২) মুদির হিন্দুত্ববাদের বিজয় হবে অর্থাৎ তার ক্ষমতা দীর্ঘায়ু হবে।
লোকটি চিহ্নিত হওয়ায় ভয়াবহ দাংগা হতে মুসলিম সমাজ রক্ষা পেল। বিজিপির প্লান ব্যর্থ হল। কিন্তু লোকটির সাজা হল না। কারন সে সরকারের লোক, উচ্চ বর্ণের হিন্দু, মুসলিম বিদ্বেষী নেতা।

কুমিল্লার ঘটনা দেখুন,
এখানে হনুমানের পায়ের উপর রাখা হল কোরআন। কে, কেন রাখল তা বুঝার জ্ঞান না থাকলে কিসের মুসলমান ? হুজুগে মুসলমানে কাঁচা ঈমানে আগুন জ্বালিয়ে হিন্দু বিদ্বেষ জাগিয়ে মন্দিরে হামলা ভাংচুর করা, হিন্দুদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়া দেয়া। তাদেরকে এলাকা ছাড়া করা। এই হল এই দেশীয় ভুমিদশ্যু, গড ফাদার এবং চরম মুসলিম হিতাকাংখী নেতা হওয়ার প্লান। নির্বাচনে ধর্ম কার্ড ব্যবহার করে বিজয়ী হওয়া। ইস্কন, বিজিপি বাংলাদেশে তাদের মত শিয়াল বাহিনী গঠন করেছে। এই দেশের কিছু ধ্বজভংগ রোগাক্রান্ত হাইব্রিড রাজনীতি নেতারা এই বিষাক্ত সাপ নিয়ে খেলে। তারা হিন্দুদের বন্ধু নয়। চরম দুশমন।

আমি কুমিল্লার একাধিক ভিডিও দেখেছি। তাতে কোন ইসলামপন্থী মন্দিরের আশে পাশে, পুলিশের সাথে বা হিন্দুদের সাথে সংঘাতে দেখিনি। প্রায় সকল পোলাপান লুংগি,পেন্ট শার্ট পড়া, দাড়িহীন উশৃংখল যুবক দেখলাম। যিনি ভিডিও ধারন করেছেন, ডায়ালগ দিচ্ছেন তাকে দেখা যায়নি। এক বলদ যুবকের ভিডিও ব্যাপক প্রচার দেখলাম। একাধিক যুবক বলছে, হুজুরদেরকে হিন্দুরা পিটাচ্ছে, পুলিশে মারছে। কিন্তু তার ভিডিও নেই। আর ওখানে কোন হুজুর যাবার প্রশ্ন অবান্তর। কোন হুজুর মন্দিরে হামলা করার রেকর্ড নেই। যদি কোন হুজুর মন্দিরে হামলা করতে যায় তাইলে পিটা খাওয়াই উচিত। তিনি ইসলাম বুঝলে এই ঘটনা থামাতে বা ঘটাতে মন্দিরে যাবেন না। নিয়মতান্ত্রিক পথে তিনি প্রতিবাদ করবেন, বিচার চাইবেন। হৈ হাংগামায় লিপ্ত হওয়া তার কাজ নয়।

এই সব ঘটনায় মুসলমানের লাভ কিছু মানুষের লাশ বুঝে নেয়া। হিন্দুদের লাভ হিন্দু বিদ্বেষ তাজা করা। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি বিনাশ করা। এই ষড়যন্ত্রের প্লানার সফল অনেকটা। সরকার এসব ঘটনা তদন্ত করে না। চাপে পড়লে কিছু আলতু ফালতু লোক ধরে কোর্টে পাঠায়। কোর্ট তাদের ছেড়ে দেয়।
সেক্যুলার সরকারের জন্যে এসব খেলায় অনেক লাভ। মার খায় মুসলমান পুলিশের হাতে মুসলমান। অন্যের বানানো ফাঁদে পা দিয়ে ভুমি দশ্যুদের মোটাতাজা প্রকল্প এগিয়ে দিচ্ছে মার খেয়ে, লাশ হয়ে।
হায়রে হুজুগে বাংগাল কবে তোরা মানুষ হবি !!