ভোলার চরফ্যাশনে স্বাস্থ্যবিধি নিখোঁজ ! মোড়ে মোড়ে জট।
কামরুজ্জামান,চরফ্যাশন //
লকডাউন শিথিলের পর ভোলার চরফ্যসনে স্বাস্থ্যবিধি নিখোঁজ হয়েছে। জমে উঠেছে ঈদ বাজার। শহরের দোকানপাট ও বিপণিবিতানে ক্রেতা সমাগম বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি উপেক্ষ দূরত্ব বজায় না রেখেই পথচারীরা চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। চলছে সব ধরনের গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত যান।
হঠাৎ যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রোববার সড়কের মোড়ে মোড়ে ছিল যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।
স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঈদ সামগ্রী কেনাকাটায় করোনার সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পবিত্র ঈদ উল আযহাকে কেন্দ্র করে চরফ্যাসন বাজারের চকবাজার, সোনালী রোড, জনতা রোড, থানা রোড, শরীপ পাড়া, হাসপাতাল রোড,জ্যাকব এভিনিউসহ সদর রোডের দোকানপাট ও বিপণিবিতানে ক্রেতা সমাগম ছিল অত্যাধিক।
ক্রেতারা সামাজিক দূরত্ব পুরোপুরি অমান্য করে মাস্ক না পরেই ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে কারও মাস্ক ছিল পকেটে, থুতনিতে বা হাতে। পাশাপাশি এখানকার গণপরিবহণের অধিকাংশ চালক ও যাত্রীও মানেননি স্বাস্থ্যবিধি।
বাজারের সড়কগুলোর ফুটপাত দখল করে অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হরেক পণ্য বিক্রি করায় ফুটপাত সংকুচিত হয়ে গেছে। এতে করে পথচারীরা বাধ্য হয়ে গাদাগাদি করে চলাচল করেছেন। তাছাড়া প্রধান সড়কগুলোর সড়ক অবৈধ পার্কিংয়ে দখল হয়ে থাকায় সড়কে জট বেড়েছে।
হঠাৎ করে যানজট বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে পৌরসভা কর্তৃক মোতায়োন কৃত আনসার সদস্যদের।
পৌর ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু জানান, সোমবার দুপুরে মোটরসাইকেলে চড়ে বাজারের উত্তর মাথা থেকে শরীপ পাড়া ইসলামী ব্যাংকে পৌছতে ৪০ মিনিট সময় লেগেছে । যা অন্যান্য দিন সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছানো যায়।
কালীবাড়ি রোডের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব ডাঃআবদুল হাই চৌধুরী জানান, নাতিদের জন্য ঈদ পোশাক কিনতে বের হয়ে এত লোকসমাগম দেখে চরম বিপাকে পড়েছেন। তবুও শিশুদের আনন্দের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা কেনাকাটা করেছেন তিনি।
চরফ্যাসন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনায় দোকান মালিকরা বদ্ধপরিকর।
দোকান মালিক-কর্মচারীদের সচেতন করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া কিছু সংখ্যক গ্রাহক মাস্ক পরতে চান না, পরতে বললে বাকবিতণ্ডায়ও জড়াচ্ছেন অনেকেই।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনা ও ক্রেতাদের সচেতনতার জন্য সোমবার ইয়ুথ ফাউন্ডেশন,যুব জলবায়ু ফোরাম,নয়াদিগন্ত পাঠক ফোরাম,কোস্ট ট্রাস্ট,জলবায়ু ফোরামসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন আখন ,পৌর কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু,শিক্ষক নেতা অধ্যাপক কামরুজ্জামান,কোস্ট ট্রাস্ট কর্মকর্তা রাশিদা খানমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকপনা কর্মকর্তা ডঃ শোভন বসাক বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যক্তিগত সচেতনতার বিকল্প নেই। তাই নিজ ও পরিবারের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় সকলকে নিয়মানুযায়ী মাস্ক পরার পাশাপাশি জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার নির্দেশিত বিধি নিষেধ মানতে হবে। অন্যথায় করোনার সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল- নোমান রাহুল বলেন, চরফ্যাসন বাজারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। জেল-জরিমানা করে নাগরিকদের মাস্ক পরানো কঠিন কাজ। তাই স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে সব নাগরিকের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।