ভোলার চরফ্যাসনের জোড়া খুনের আসামী শরীফ ৫ দিনের রিমান্ডে, সিএনজির সন্ধানে পুলিশ

DipKantha
DipKantha
প্রকাশিত: ৭:২২ পূর্বাহ্ণ, মে ৭, ২০২১

কামরুজ্জামান //

চরফ্যাসনের জোড়া খুনের প্রধান আসামী ভাড়াটে খুনি শরীফুল ইসলাম ওরফে শাহীনকে বুধবার ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছেন চরফ্যাসন থানা পুলিশ। বুধবার সকালে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন সহ চরফ্যাসন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট সাদিক আহমেদ তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে খুনে জড়িত অপরাপর খুনি, খুনের পরিকল্পনা এবং খুনের ব্যবহৃত সিএনজি এবং ইহার চালক সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসহ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজবে পুলিশ। মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্ট চরফ্যাসন থানা পুলিশের সূত্র থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

পুলিশ ও শরীফুলের পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, ৭ এপ্রিল মধ্যরাতের আগে ঘটে জোড়া খুনের ঘটনা। আগের দিন ৬ এপ্রিল চর মানিকার করিম পাড়া গ্রামের বাড়িতে আসেন শরিফুল ওরফে শাহীন।পরদিন বাড়িতেই ছিলেন। তারপর থেকে সে উদাও হয়ে যায়। শরিফুল ওরফে শাহিনের চাচা তাজুল ইসলাম জানান, শাহীন বাবা- মায়ের একমাত্র ছেলে। তারদাদী, বাবা, মা ও ৪ বোন আছে। মা ও বাবা চট্টগ্রামের মদিনা ঘাটে থাকেন। সেখানে বাবা শাহে আলম সিএনজি চালক। বোনদের মধ্যে সারমিন কে দক্ষিণ আইচা এবং সুমাইয়াকে চট্টগ্রাম বিয়ে দেয়া হয়েছে। তৃতীয় বোন মাহিয়া সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী, সে চট্টগ্রামে বোন সুমাইয়ার কাছে থাকে। ছোটবোন মায়মুনা তৃতীয় শ্রেনীতে পড়ে, সে বাড়ীতে দাদীর কাছে থাকে।বাড়ীতে দাদী আর ছোট বোন মায়মুনা ছাড়া আর কেউ থাকে না।বিশাল এই বাড়ীতে ৩৯ টি পরিবারের বসবাস।৪০/৪৫ বছর আগে শরীফুলের বাবা শাহে আলম চট্টগ্রাম চলে যান।শাহে আলমের গোটা পরিবার চট্টগ্রামে থাকতো।দেড় বছর বয়সের সময় শরীফুল ওরফে শাহীন চট্টগ্রাম চলে যায়। দীর্ঘ ২৮ বছর পর ৩ বছর আগে বাবা- মায়ের সাথে চরমানিকা গ্রামের বাড়ীতে আসেন শরীফুল। সে সময় বাড়ীতে আধাপাকা ঘর তৈরী করা হয়। সে ঘরে শরীফুল ওরফে শাহীনের দাদী এবং ছোট বোন মায়মুনা থাকেন। প্রতিবেশীদের সাথে তাদের সম্পর্ক শীথিল। প্রতিবেশীরা তাদেরকে ভালো মানুষ হিসেবেই জানতেন। দ্বিতীয় বার শরীফুল ওরফে শাহীন গ্রামের বাড়ীতে আসেন ৬ এপ্রিল এবং পরদিন ৭ এপ্রিল হাওয়া হয়ে যান।

পুলিশ জানায়, ৭ এপ্রিল রাতেই ঘটে খুনের ঘটনা। খুনের একদিন আগে শরীফুল ওরফে শাহীন এবং অপর এক ভাড়াটে খুনি একই সাথে চট্টগ্রাম থেকে চরফ্যাসনে আসেন। এদের মধ্যে শরীফুল ওরফে শাহীন পেশায় প্রাইভেট কার চালক হলে ও অপর খুনি পেশায় সিএনজি চালক।সিএনজি চালক ওই খুনি বেল্লালের আত্মীয় এবং তার চট্টগ্রামের বাসায় বসেই খুনের ছক সাজানো হয়।ছক অনুযায়ী ভাড়াটে ২ খুনি একদিন আগে চট্টগ্রাম থেকে চরফ্যাসনে আসেন এবং খুনের দিন ৭ এপ্রিল দুই ভিক্টিম তপন ওদুলালকে সঙ্গে নিয়ে চরফ্যাসনের খুনের স্থলে নিয়ে আসেন খুনের মূল পরিকল্পনাকারী বেল্লাল। ভিক্টিমদের আনার কাজে ব্যবহার করা হয় একটি সিএনজি। ওই সিএনজি এবং ইহার চালকের পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। খুনের ঘটনা ঘটিয়ে ভাড়াটে খুনিরা ওই রাতেই চট্টগ্রামের পথে চরফ্যাসন ত্যাগ করেন।

আজ বুধবার দুপুরে শরীফুল ওরফে শাহীনের বাড়ীতে গিয়ে দেখা গেছে চর আিচা সায়ের উদ্দিন মুন্সী বাড়ীর বাসিন্দা শরীফুল ওরফে শাহীন। বিশাল এই বাড়ীতে ৩৯ টি পরিবার বসবাস করেন, যারা সবাই নিকট আত্মীয় স্বজন। ৩৯ টি পরিবারের মধ্যে শরীফুল ওরফে শাহীনের আধাপাকা ঘরটি দামী ফার্নিচারে ঠাসা এবং পরিপাটি। কিন্তু এই চার কক্ষের বাসিন্দা মাত্র দুজন শরীফুলের দাদী এবং ছোট বোন মায়মুনা।