ভোলার চরফ্যাশনের মাথাবিহীন দেহাবশেষ দুই সহদর
এম লোকমান হোসেন//
ভোলার চরফ্যাশনে ১৪দিন পর মাথাবিহীন দগ্ধ জোড়া দেহাবশেষের পরিচয় পাওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে জমি বিক্রির টাকার লেনদেন নিয়ে তাদের খুন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) জোড়াখুনের মুল হোতা সিরাজুল ইসলামকে আটকের পর তার দেয়া তথ্যানুযায়ী ওইদিন বিকালে আসলামপুর ইউনিয়নের জনৈক মহিবুল্লাহ’র বাড়ীর সেফটিক ট্যাংকের ভিতর থেকে জোড়া খুনের মাথা দুটি উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত দু’জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন দুলাল দাস ও অমিত দাস। এরা দু’জন সম্পর্কে আপন ভাই। তাদের বাড়ি আসলামপুর ইউনিয়নে।
থানায় সিরাজের দেয়া তথ্যানুযায়ী জানা গেছে, তিন বছর আগে বিল্লাল ও সিরাজুল ইসলাম, দুলাল দাস ও অমিতের জমি ও বাড়ি ক্রয় করে। বায়না হিসেবে তাদেরকে তিন লক্ষ টাকা দেয়। বাকী টাকা দলিল সম্পাদান করার সময়ে দিবে। নিরাপত্তারহীনতার কারনে হঠাৎ দুলাল ও অমিত তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে রাতের আধারে ভারত চলে যায়। এরপর তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্হতায় দলীল সম্পাদান করে বাকী টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাদেরকে আসতে বলে। বাকী টাকা নিতে গত বছরে তারা দু’জনে বাংলাদেশে আসে। সিরাজ ও বিল্লালের কাছ থেকে বাকি টাকা না পাওয়ায় তারা দলিল দেয়না। টাকা নেয়ার জন্য তাদের দু’জনকে ডেকে নেয় জনমানবহীন নির্জন একটি বাগান বাড়িতে।
বাকী টাকা পাওয়ার জন্য গত ৭ এপ্রিল আসলামপুর ইউনিয়নের সুন্দরী ব্রিজের অদূরে জামাল ভুঁইয়াদের পরিত্যক্ত নির্জন বাগানে যায় দুলাল ও অমিত দাস। পুলিশ ধারণা করছে এই সময়ে তাদের খুন করে দু’জনের মাথা কেটে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
পরদিন ৮ এপ্রিল এক কৃষক সকালে তার ক্ষেতের অদূরে মাথাবিহীন দেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে পোড়া দেহাবশেষ দুটি উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমে পাঠায়। তখনও তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় এস আই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা একটি মামলা দায়ের করেছেন।
নির্মম এই খূনের রহস্য উদঘাটনে অনুসন্ধানের পরে পুলিশ বৃহস্পতিবার বিল্লালের বাড়িতে হানা দেয়। পুলিশের অভিযানে সিরাজুল ইসলাম আটক হয়। এসময় বিল্লালকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় এপর্যন্ত ৭জনকে আটক করা হয়েছে।
আজ ২৩ এপ্রিল (শুক্রবার) সকালে সেলফোনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাংবাদিককে জানান, দেহাবশেষের সাথে থাকা সাইড ব্যাগে ব্যবহ্নত মালামাল আংশিক পুড়ে যাওয়া মালামাল ও আটক সিরাজের বর্ননানুযায়ী প্রাথমিকভাবে দুলাল দাস ও অমিতের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে।
চরফ্যাশন থানার ওসি মনির হোসেন মিয়া জানান, হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিরাজুল ইসলামসহ ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। মাথা দুইটি ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হবে। দুই হত্যাকান্ডের নেপথ্যে আরও অনেকে জড়িত রয়েছে বলে সিরাজ জানায়।