মরণনেশা ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেইমে ঝুঁকছে শিক্ষার্থীরা

DipKantha
DipKantha
প্রকাশিত: ২:২০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০২১

এম মিরাজ হোসাইন//

সারা দেশের মতো ভোলার দৌলতখানে ইন্টারনেট ফাইটিং ফ্রি ফায়ার গেইমের প্রতি ঝুঁকছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অলস সময়ে এ গেইমসে ঝুঁকছে তারা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভোলা দৌলতখানের উড়তি বয়সের শিক্ষার্থীরা ও পুরো যুবসমাজ দিন দিন ফ্রি ফায়ার গেইমসের প্রতি চরমভাবে ঝুঁকছে। যে সময়টা তাদের কাটানোর কথা ছিল পড়ালেখার কাজে, পড়ন্ত বিকালে নিয়মিত খেলাধুলা তথা শরীর চর্চার কাজে ঠিক সেই সময় তারা কাটাচ্ছে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি খেলার কাজে। প্রত্যহ ( ৭-২২) বছরের যুবকেরা অ্যান্ড্রয়েড ফোন দিয়ে এসব গেমস খেলার প্রতি প্রবল আসক্ত হচ্ছেন। এসব গেমস থেকে যুব সমাজকে ফিরিয়ে আনতে না পারলে বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা করছেন বিশ্লেষকরা।
ফ্রি ফায়ার গেমসে অনুরাগী ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ হাসনাইন জানান,প্রথমে আমার কাছে ফ্রি ফায়ার গেমস ততটা ভালো লাগতো না। এমন কি আমি খেলার ফর্মূলা জানতাম না।
কিছু দিন বন্ধুদের খেলা দেখে খেলতে খেলতে আমি ফ্রি ফায়ার ও পাবজি খেলার প্রতি আসক্তি হয়ে পড়েছি। এখন আমি গেমস না খেলে থাকতে পারি না।

নবম শ্রেনীর আরেক শিক্ষার্থী মাহাদি হাসান জানান,আমিও প্রথমে ফ্রি ফায়ার গেমস খেলার প্রতি ততটা টান ছিল না কিন্তু অতিরিক্ত খেলার কারনে আমারো উক্ত গেমস খেলার প্রতি প্রবল আসক্তি হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে নেটের সমস্যা হওয়ার কারনে খেলার প্রতি অত্যধিক আকর্ষণ হওয়ার ফলে সময়মত খেলতে না পারলে মুঠোফোন ভেঙ্গে ফেলার মত পরিস্থিতির উপক্রম হয়। এমন কি ফ্রি ফায়ার যে একবার খেলে সে কখনো উক্ত খেলা ছাড়তে পারবে না।
ফ্রি ফায়ার ও পাবজি নামক গেমস কে মাদকদ্রব্যের চেয়েও ভয়ংকর বলে উল্লেখ করেছেন দৌলতখান পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ডের চৌকস কাউন্সিলর জনাব মোঃ মোসলেউদ্দিন । তিনি বলেন, এ সমস্যা থেকে ইয়াং জেনারেশন কে বাঁচাতে হলে অবশ্যই অভিভাবকের পাশাপাশি শিক্ষকসমাজ, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন কে এগিয়ে আসতে হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দৌলতখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ( ইংরেজি, বিসিএস নন ক্যাডার) জনাব হামিদ উল্লাহ জানান,
শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার চেয়ে মোবাইলে বেশি সময় ব্যয় করে। যে বয়সে তারা নিজেদের তৈরি করবে সেই বয়সে তারা সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ফ্রি ফায়ার, পাবজি গেমে নিজেদের বন্দী করে রেখেছে। এরা এসবের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। অনেক অভিভাবক আমাকে ফোন করে তাদের উদ্বিগ্নতার কথা জানিয়েছেন। একজন অভিভাবক বলেন যে তার ছেলে ভোর ৪ টার সময় উঠে মোবাইলে ফ্রি ফায়ার খেলে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করাই পারে তাদের সঠিক পথে নিয়ে আসতে।

আগেকার দিনে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার পর অবসর সময়টুকু কাটতো খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদনের মাধ্যমে কিন্তু এখনকার দিনের চিত্র পুরোই ভিন্ন। যুবকেরা অ্যান্ড্রয়েট ফোন দিয়ে এখন গেমসের প্রতি চরমভাবে ঝুঁকছে। অনেক শিক্ষার্থীই পড়ালেখার টেবিল ছেড়ে এখন এসব গেমসের দিকে ঝুঁকছে। আবার কখনো কখনো তারা ইন্টারনেটের খারাপ সাইটের দিকে আসক্তি হয়ে পড়ে। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে সমাজে অপরাধপ্রবণতা বেড়েই চলছে। তাই পিতামাতা ও সমাজের সচেতন মহল সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিকে অভিনব কৌশলে খেয়াল রাখতে হবে।