আজ ১০ ডিসেম্বর ভোলা হানাদার মুক্ত দিবস

DipKantha
DipKantha
প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৯, ২০২০

ইউনুছ শরীফ//

 

 

আজ ১০ ডিসেম্বর ভোলা হানাদার মুক্ত দিবস। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের এই দিনে ভোলার আবাল, বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ, ছাত্র, যুবকসহ সর্বমূখী বীর মুক্তি যোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। মুক্ত  হয় ভোলা। স্বাধীন হয় ভোলা। সেই থেকেই এ দিনটিকে পালন করা হয় ভোলা হানাদার মুক্ত দিবস।

 

১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস পর্যন্ত ভোলা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুক্তিকামী নারী, পুরুষের ধরে নিয়ে আসে পাকিস্থানী হানাদার বাহীনি। এনে ভোলার যুগীর ঘোল বর্তমান পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেষ্ট হাউজে চালায় অত্যাচার নির্যাতনের স্টীম রোলার। তাদেরর এ অত্যাচার থেকে রেহাই পায়নী শিশু ও গর্ভবর্তী নারীরাও। অত্যাচার করতে করতে নিন্মম ভাবে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। যারা অত্যাচারে মৃত্যু বরণ না করতো তাদেরকে হত্যা করা হতো আরো কঠিন অত্যাচারের মাধ্যমে। অবশেষ এসব লাশ যুগীর ঘোল পানি উন্নয়ন বোর্ডে ১০০গজ পূর্ব পাশে বিশাল গর্ত করে পুতে রাখে। যা বর্তমানে বদ্ধ ভূমি নামে পরিচিত। এ সব অত্যাচার নির্যাতনের এক পর্যায়ে ফুসে ওঠে ভোলার আবালবৃদ্ধ সর্বস্তরের মানুষ। শুরু হয় বাঁধা আর বাঁধা। হাঠাও পাস্তিনী বর্বর বাহীনি। চলতে থাকে সংঘর্ষ। এক পর্যায়ে এসব প্রতিবাদী মানুষের বাধাঁর মূখে ডিসেম্বর মাসের নয় তারিখ রাত সাড়ে তিনটার দিকে পাকিস্তনী বাহিনী তাদের জল বোর্ট নিয়ে ভোলা খাল দিয়ে ফায়ার করতে করতে ঢাকার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়। প্রতিবাদী ভোলার মানুষ তাদেরকে ধাওয়া করতে করতে বাঘমারা নামক স্থান পর্যন্ত গিয়ে আর তাদের দেখা না পেয়ে চলে আসে। শেষ হয়ে যায় রাত। ১০ তারিখ সকাল থেকেই উল্লাসে ফেটে পরে ভোলার মানুষ। সেই সময় থেকেই ভোলাবাসী এ দিনটিকে হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে পালর করে আসছে। এ ঘটানর স্মৃতি চারন করতে গিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষেদের চেয়ারম্যান এবং তৎকালীন যুুবমুক্তি বাহীনির নেতা আবদুল মোমিন টুলু বলেন, ১৯৭১ সালে আমি ইন্টার মিডিয়েটের ছাত্র। আমার বয়স ১৯ বছর। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাাষনের পর আমরা ছাত্র-জনতা মিলে ভোলায় যুবমুক্তি বাহিনী গঠন করি। পরবর্তীতে যখন মুক্তিবাহিনী ভোলায় আসে তখন আমরা ভোলা শহর ছেড়ে দিয়ে আসপাশের থানায় গিয়ে অবস্থান নেই এবং সেখানে মুক্তিবাহিনী নামে আাবারও সংগঠন তৈরী করি। সেখান থেকেই তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকি। ৮ ডিসেম্বর আমরা একযোগে ভোলা এসে পাকিস্তানী বাহিনীকে কডন করে রাখি। এক পর্যায়ে যখন তারা বুজতে পারে দেশ ¯^াধীন হয়ে যাবে এবং মুক্তি বাহিনীর লোকের তাদেরকে মেরে ফেলবে তখন তারা ৯ তারিখ রাত সাড়ে তিনটার দিকে সবাই গান বোর্ট নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে পালাতে থাকে। আমরা এখবর পেয়ে আমাদের কমান্ডাার মরহুম জয়নাল আবদীন গাজির নির্দেশে ভোলা আলীয়া মাদ্রাসার পেছন দিয়ে গরুহাটা নামক স্থান দিয়ে এক যোগে আাক্রমন করি। কিন্তু তাদের ভাড়ি অস্ত্র এস এম জি, এল এম জি’র কাছে আমাদের থ্রিনট থ্রি রাইফেলের গুলি তাদের লক্ষভ্রষ্ট ছেদ করতে পারে নাই। তার পরও তাদের ধাওয়া করতে করতে আমরা বাঘমারা পর্যন্ত যাই। তারা গুলি করতে করেতে ভোলা খাল দিয়ে যখন নদীতে চলে যায়। তাদের না দেখতে পেয়ে আমরা চলে আসি। তখর ১০ ডিসেম্বর ভোর। আমারা ভোলা এসে ভোলা মুক্ত ঘোষনা করি। আমি মনে করি সে দিন এ যুদ্ধে কুলি মজুর থেকে শুরু করে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ সবাই মুক্তিযোদ্ধা।কারন আমরা অস্ত্রনিয়ে যুদ্ধ করেছি তারা অস্ত্রনিয়ে যুদ্ধ না করলেও তারা আমাদের খাল, বিল, গ্রাম, থাকা- খাওয়া সর্ব যায়গায় আমাদের সহযোগীতা করেছে। এ জন্য তারাও আমাদের মুক্তিযোদ্ধা।