ভোলার চরফ্যাশনে গ্রাম পুলিশের যাতায়াত ভাড়ায় ভাগ নিচ্ছে মনির!

DipKantha
DipKantha
প্রকাশিত: ৪:৩৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২০

স্টাফ রিপোটার ঃ

গ্রামপুলিশের যাতায়াত ভাড়ার টাকায় ভাগ বসানোর অভিযোগ উঠেছে চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় স্থানীয় সরকার শাখার অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে। নির্বাহী কার্যালয়ের অফিস সহকারী মনির আলম ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এ উপজেলায় চাকরি করেন। পরে ওয়ান ইলেভেনের সময়ে বদলি হলে এক বছর লালমহন নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে চাকরি করে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে আবারোও চরফ্যাশন উপজেলায় বদলি হয়ে আসেন তিনি। কিছুদিন উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করলেও অনিয়ম ও দূর্নিতীর অভিযোগে মনির আলমকে বদলি করা হয় উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের প্রসাশনিক কার্যক্রম স্থানিয় সরকার শাখায়। দির্ঘ ২ যুগে তার বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ও দূর্নিতীর অভিযোগ উঠলেও দাপ্তরিক বদলির মধ্য দিয়েই এ অনিয়ম ও দূর্নিতীর অভিযোগ চাপা পড়ে থাকে ফাইল বন্ধি হয়ে। এমনটাই বলছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা ও সেবাগ্রহীতাগণ।

রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার মাদ্রাজ ইউনিয়নের একাধিক গ্রামপুলিশ অভিযোগ করে বলেন, দায়িত্ব পালনে দূর্গম এলাকায় যাতায়াতের জন্য সরকারী যাতায়াত ভাতার টাকা প্রায় ৩বছর ধরে ২২মাসের ভাতা আটকে থাকার পরে গত বৃহস্পতিবার ওই টাকা আনতে উপজেলায় গেলে অফিস সহকারী মনির আলম ২৬ হাজার ৪শ টাকা থেকে ২হাজার ৪শ টাকা করে জনপ্রতি গ্রামপুলিশের কাছ থেকে রেবেনিউ স্টাম্পে সাইন নিয়ে রেখে দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামপুলিশ বলেন, ৩২মাস ধরে আমাদের ওই যাতায়াত ভাতার টাকা সংশ্লীষ্ট দপ্তরে আটকা থাকলে আমাদেও গ্রামপুলিশের সংগঠনের সদস্যরা মিলে যাতায়াত ভাতাগুলো কিভাবে পেতে পাড়ি এ নিয়ে মনির আলমের সাথে আলোচনা করলে“অনারিয়াম” দিতে হবে বলে মনির আলম আমাদের প্রস্তাব দেন। আরেক গ্রামপুলিশ কান্নাভরা কন্ঠে বলেন, “প্রতি মাসে সাড়ে ৬হাজার টাকা বেতনের চাকুরিতে যাতায়াতের ভাতা বাবদ প্রতিমাসে ১২শ টাকা করে দেয়ার কথা থাকলেও ৩২ মাস ধরে ওই টাকা পাইনি। অথচ অন্তত প্রতি ৩মাস অন্তর ওই ভাতার টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও সেখান থেকেও মনির আলম কেটে রেখেছে টাকা। ওই গ্রাম পুলিশ ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন,আসলে মনির আলমরা শুধু আমাদের যাতায়াতের ভাতায় ভাগ বসায়নি তারা আমাদের মতো শত,শত গড়িবদের পেটেও লাথি দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ২শ গ্রামপুলিশের মধ্যে ১৮৩জনের জন্য ২২ মাসের যাতায়াত ভাতা বাবদ ৪৬ লাখ ৫১ হাজার ২শত টাকা বরাদ্দ হয়। এদের মধ্যে ১৫ জনের জনপ্রতি ১৪হাজার ৪শ টাকা ও ১৬৮জনের জন প্রতি ২৬হাজার ৪শ টাকা করে বরাদ্দ আসলেও অভিযোগকারীদের মাঝে গত ৫ডিসেম্বর শনিবার জনপ্রতি ২৪হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়। এ অভিযোগ অস্বীকার করে মনির আলম বলেন, বক্তব্য দিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধ আছে। একপর্যায়ে মনির আলম বলেন, রেবানিউ স্টাম্পের খরচ ছাড়া গ্রামপুলিশদের কাছ থেকে “অতিরিক্ত” টাকা নেয়ার কোনোও সুযোগ নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, গ্রামপুলিশরা কোনো অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও ওই গ্রামপুলিশদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। মনির আলমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।